অর্থনীতি কাকে বলে? অর্থনীতি পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর

 অর্থনীতি কাকে বলে?

অর্থনীতি কাকে বলে? অর্থনীতি পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর


সমাজ ও সভ্যতার অগ্রগতির সংঙ্গে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি চিন্তা-চেতনা এবং ধ্যান- ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে মানুষের কল্যাণের নিমিত্তে উৎপত্তি হয়েছে অর্থণীতি। অর্থনীতি একটি গতিশীল বিষয়, তাই সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের নতুন নতুন চিন্তাধারার সূচনা হয়েছে। পরিবর্তন েএসেছে অর্থনীতিতে।

অর্থনীতির উৎপত্তি

অর্থনীতির ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Economics'  এটি প্রাচীন গ্রীক শব্দ ‘ Oikonomia'  হতে উদ্ভুত হয়েছে। যার অর্থ গৃহ পরিচালনা। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে অর্থনীতি শব্দটির অর্থ গৃহ পরিচালনার পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তাই অর্থনীতির বিষয়বস্তু ব্যাপক হওয়ার এর সংজ্ঞার পরিধিও বিস্তৃত হয়েছে।

অর্থনীতির সংজ্ঞা

জীবনের মৌলিক সমস্যা নিয়ে  েধরনের প্রশ্ন লক্ষ্য করা যায়, এবং সে সকল প্রশ্নের সমাধান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপর যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে অর্থনীতি বলে।
অর্থনীতি সম্পর্কে নিম্নে কয়েকজন অর্থনীতিবিদদের পনপ্রিয় সংজ্ঞা তুলে  ধরা হলো

অর্থনীতির জনক এ্যাডাম স্মিথ এর মতে,

 “অর্থনীতি হচ্ছে সম্পদের বিজ্ঞান।” তার মতে, “অর্থনীতি  এমন একটি বিজাঞান যা মানুষের সম্পদের প্রকৃতি ‍ও কারণ সম্পর্কে আলোচনা করে।”

অধ্যাপক শার্শাতল এর মতে, 

“অর্থনীতি হল এমন একটি বষিয় যা মানব কল্যাণেল সাথে সম্পর্কিত দৈনন্দিন জীবনের কার্যবলি নিয়ে আলোচনা করে”

অধ্যাপক মার্শাল এর মতে’

“অর্থনীতি এমন একটি বিজ্ঞান বা মানুষের অভাব্ এবং বিকল্প ব্যবহার যোগ্য সীমিত সম্পদের মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ক মানব আচরণ সমন্ধে আলোচনা করে।”

অর্থনীতিবিদ ববার এর মতে, 

“অর্থনীতি হলো স্বল্প উপকরণসমূহের বিল বন্টন এবং কর্মসংস্থান ও আয়ের  নির্ধারক বিষয় সমূহের আলোচনা।”

পরিশেষে বলা যায়, বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ বিভিন্ন দৃষ্টি েকাণ থেকে অর্থনীতি সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তবে অধিকাংশ আধুনিক অর্থনীতিবিদ সম্পদের ‘স্বল্পতা’ ও ‘নির্বাচনজনিত’, সমস্যার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন্। তাই সংক্ষে েপ বলা যায়, যে শাস্ত্র মানুষের অসীম অভাব এবং বিকল্প ব্যবহার যোদ্য সীমিত সম্পদের মধ্যে সমস্বয় সাধনকারী কার্যাবলি আলোচনা করে তাকে অর্থনীতি বলে।

অর্থনীতি পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর

আধুনিক সমাজে অর্থনীতি পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কারন বর্তমান সমাজে অধিকাংশ সমস্যা হল অর্থনৈতিক সমস্যা। আর এসব সমস্যার সমাধান খুজে পাওয়া যায় অর্থনীতিতে। তাই সমাজবদ্ধ মানুষের সব অর্থনৈতিক কাজকর্ম অর্থনীতির পরিধিভুক্ত বিধায় সমাজের সর্বস্তরের জনগণের নিকট এর গুরুত্ব রয়েছে। আধুনিক সমাজে অর্থনীতি পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়ত স্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১. মানুষের দৈনন্দিন জীবনে

মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অর্থনীতি পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। দৈনন্দিন জীবনে মানুষ অসীম অভাবের সম্মুখীন হয়। কিন্তু অভাব পূরণের জন্য সম্পদ প্রয়োজনের তুলনায় সীমাবদ্ধ। এই সীমিত সম্প দ্বারা মানুষ কিভাবে অসীম অভাব পূরণের চেষ্টা করে তা অর্থনীতি পাঠের মাধ্যমে জানা যায়।

২. উৎপাদনের ক্ষেত্রে

উৎপাদনের ক্ষেত্রেও অর্থনীতির জ্ঞান অপরিহার্য। দেশের সীমিত সম্পদ দ্বারা কোন কোন দ্রব্য সামগ্রি উৎপাদন করা হবে, কতটুকু উৎপাদন করা হবে, কিভাবে উৎপাদন করা হবে তা অর্থনীতি পাঠের মাধ্যমে জানা যায়।

৩. সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের ক্ষেত্রে

অর্থনীতি িএকটি দেশের সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের পথ নির্দেশ করে । দেশের সীমিত সম্পদ কিভাবে নিয়োগ করা হলে উৎপাদন সর্বাধিক হবে এবং জনগনের অর্থণেতিক কল্যাণ বৃদ্ধি পাবে তা অর্থনীতি পাঠের মাধ্যমে জানা যায়।

৪. সরকারি প্রশাসনের ক্ষেত্রে

সরকারি প্রশাসনের কসল স্তরের কর্মচারী কর্মকর্তাদের অর্থনীতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা খুবই জরুরী। ারণ সকল দেশেই সরকারের দারিদ্র, বেকার সমস্যা, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ঘাটতি, বাণিজ্য ঘাটতি ইত্যাদি সমস্যার সমাধান করতে হলে অবশ্যই অর্থনীতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।

৫. অনুন্নত দেশের ক্ষেত্রে

অনুন্নত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অর্থনীতির জ্ঞান একান্ত প্রয়োজন। অনুন্নত দেশের ক্রমবর্ধমান দারিদ্র, বেকারত্ব, খাদ্য ঘাটতি, রিক্ষরতা দূরীকরণ এবং দেশের অর্থনৈতিক প্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য অর্থনীতি পাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৬. ব্যবসা- বাণিজ্যের ক্ষেত্রে

ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও অর্থনীতির জ্ঞান অপরিহার্য । বাজারে কোন দ্রব্যের  চাহিদা কি পরিমাণ, ভব্ষ্যিতে তার চাহিদার কোন পরিবর্তন হবে কিনা এসব্ জ্ঞান না থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য সফলভাবে পরিচালনা করা যায় না।

৭. মিতব্যয়িতার ক্ষেত্রে

অর্থনীতি মানুষকে মিতব্যয়ী হতে শিক্ষা দেয়। মানু ষের অভাব অসীম কিন্তু তাদের আয় সীমিত । এই সীমিত আয়ের সাহয্যে বিভিন্ন অভাব পূরণের জন্য মানুষকে মিতব্যয়ী হওয়া প্রয়োজন। এজন্য মিতব্যায়ী জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

৮. শ্রমিক নেতাদের ক্ষেত্রে

শ্রমিক নেতাদের ক্ষেত্রেও অর্তনীতি জ্ঞানের প্রয়োনীয়ত রয়েছে। শ্রমিক আন্দোলন পরিচালনা এবং শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই শ্রমিক নেতাদের অর্থনীতি বিষয়ক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

৯. রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রে

দেশের রাজনীতিবিদদের নিকট অর্থনীতির জ্ঞান থাকা একান্ত অপরিহার্য। একজন বলিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হতে হলে তাকে অবশ্যই দেশের শিল্প নীতি, বাণিজ্য নীতি, কর নীতি, আয়-বন্টন নীতি  ইত্যাদি বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে  হবে। সুতরাং রাজনীতিবিদ হিসাবে সাফল্য অর্জন করতে হলে অর্থনীতি পাঠ একান্ত প্রয়োজন।

১০. অর্থমন্ত্রীর ক্ষেত্রে

দেশের অর্থমন্ত্রী যাতে সুষ্ঠু েএবঙ সঠিক ভাবে বাজেট ও সরকারি খরচ নির্ণয় করতে পারেন  তার জন্য অর্থনীতির জ্ঞান থাকা েএকান্ত প্রয়োজন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post