রাষ্ট্র কাকে বলে?

 রাষ্ট্র কাকে বলে?রাষ্ট্র কী ? রাষ্ট্র বলতে কী বুঝ?

রাষ্ট্র কাকে বলে?


ভূমিকাঃ

উওরঃ

মানুষ সামাজিক জীব,তাই তারা সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করে। আর রাষ্ট্র হচ্ছে সংঘবদ্ধ মানুষের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যা সমাজ তথা রাষ্ট্রের মানুষের সমগ্র জীবন প্রণালি নিয়ে আলোচনা করে।

রাষ্ট্র ঃ  সাধারণভাবে রাষ্ট্র বলতে আমরা বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠিত এক আবশ্যিক সংগঠনকে বুঝি।

প্রামান্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা দিয়েছেন। যথাঃ

রাষ্ট্রপতি উইলসন(Willson)এর ভাষায় ‘‘কোন দির্দিষ্ট ভূখেন্ডে আইন অনুসারে সংগঠিত কোন জনসমষ্টিকে রাষ্ট্র বলে।’’

অধ্যাপক আলমন্ড ও কোলম্যান (almod and Coleman ) রাষ্ট্রকে রাজনৈতিক ব্যবস্থা  হিসেবে অভিহিত করেছেন ।তাঁদের ভাষায়,``the political system is the legitimate order maintaining or transforning systern in the society.''

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিন,স্টটল বলে‘‘রাষ্ট্র হলো একটি কয়েকটি পরিবার ও গ্রামের সমষ্টি যার উদ্দেশ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবন।’’

ওপেনহেইম এর মতে,‘‘কোন জনসমষ্টি এর নিজস্ব সার্বভৌম সরকারের অধীনে কোন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করলে তাকে রাষ্ট্র বলে।’’

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে,রাষ্ট্র হচ্চে সমাজের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। যার নিজস্ব ভূখন্ড ,সরকার ,জনগণ ও সার্বভৌমত্ব রয়েছে।

আরো পড়ুন - 

রাষ্ট্রের উপাদানসমূহ উল্লেখ কর।

উওরঃ

ভূমিকাঃ

 রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনারয় রাষ্ট্রের উপাদান সম্পর্কিত আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয। রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত । নিম্নে রাষ্ট্রের উপাদানসমূহ উল্লেখ করা হলো।

  রাষ্টের উপাদানঃ রাষ্ট্রের উপাদানকে প্রদানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।যথাঃ

ক.মূখ্য উপাদান ও   খ.জনসমষ্টি;

মূখ্য উপাদান ঃ রাষ্ট্রের মূখ্য উপাদান চারটি যথাঃ

১.নির্দিষ্ট ভূখন্ড;  ২.জনসমষ্টি;

৩.সরকারও       ৪.সার্বভৌমত্ব।

গৌণ  উপাদানঃ উপরে ্উল্লিখিত চারটি উপাদান ছাড়াও রাষ্ট্রের আর ও তিনটি গৌণ উপাদান রয়েছে। যথা-

১.স্থায়িত্ব ২.স্বীকৃতি ও ৩.সাম্য।

উপসংহারঃ উপর্যক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে ,রাষ্ট্র মানুষের একটি প্রয়োজনীয় প্রতিষ্টান । এ প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠার পিছনে উল্লিখিত কাজ করে। 

রাষ্ট্রের কার্যাবলি আলোচনা কর।

উওরঃ

ভূমিকাঃ রাষ্ট্র হচ্ছে সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্টান। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল বলেছেন,‘‘মানুষ স্বভাবতেই সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব।’’তাই মানুষের প্রয়োজনেরই রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটেছে।মানুষের প্রয়োজনেই রাষ্ট্রকে বহুবিদ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয় । কিন্তু রাষ্ট্রের কি কি কাজ করা উচিত।কিংবা রাষ্ট্র কি কি কার্যাবলি সম্পাদন করবে তা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে যথেষ্ট মতপার্থক্য রয়েছে।

রাষ্ট্রের কার্যাবলি বা দায়িত্ব কর্তব্যঃ রাষ্ট্রের কার্যাবলি ও দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে মতভেদ থাকলেও কিছু কিছূ কার্যাবলি সম্পাদন করা রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য । নিম্নে রাষ্ট্রের প্রধান প্রধান কার্যাবলিসমূহ আলোচনা করা হলোঃ

১.দেশরক্ষাঃ রাষ্ট্রের প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে দেশরক্ষা তথা রাষ্ট্রের নিরাপতা নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্র গড়ে তোলে দক্ষ ও শাক্তিশালী সামগ্রিক ও আধাসমারিক বাহিনী। স্হনল,নৌ ও বিমান বাহিনীর সমম্বয়ে প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তোলা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। এছাড়া সমরাষ্ট্র তৈরি্ ্ক্রয় ,সামরিক পরিকল্পনা ,সামরিক জোট গঠন এবং প্রতিরক্ষা অবকাঠামো গড়ে তোলাও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

২.অভ্যন্তরীণ শাস্তি শৃঙ্খলা রক্ষাঃ রাষ্ট্রের আরেকটি অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শাস্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করা। এজন্য রাষ্ট্র শক্তিশালি পুলিশ ও্ আনসার বাহিনী গঠন করে থাকে। এদের জন্য বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ্ক্রয় ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। 

৩.সার্বভৌমত্ব রক্ষাঃ রাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য কাজ হলো  সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। সার্বভৌমত্ব অর্জন না করলে যেমন রাষ্ট্র গঠিত হয় না,তেমনি সার্বভৌমত্ব হারালেও রাষ্ট্র বিলুপ্ত হয়। তাই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক।

৪.অন্য রাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলাঃ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বিদেশে রাষ্ট্রদ্রত প্রেরণ ও অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা রাষ্ট্রের কর্তব্য। এ উদ্দেশ্য বিদেশে রাষ্ট্রদূতদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন ও বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন করা রাষ্ট্রের অন্যতম কর্তব্য।

৫.শাসনকার্য পরিচালনাঃ রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনা আইন বিভাগ  প্রদও আইন দ্বারা শাসন বিভাগ গঠন করতে হয়। তাছাড়া সঠিকভাবে শাসনকার্য পরিচালনার জন্য সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন ,কর্মচারী নিয়োগ করা এবং তাদের প্রশিক্ষণেল ব্যবস্থ করা রাষ্ট্রের  অন্যতম কর্তব্য। 

৬.আইন প্রণয়ন ঃ রাষ্ট্রের একটি অন্যতম দায়িত্ব হলো আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন । আইন প্রনয়ণ ,সংশোধন ও বাতিল করার জন্য রাষ্ট্রকে আইন বিভাগ গঠন করতে হয়।   

৭.বিচার কার্য সম্পাদনঃ ন্যায় বিচারের স্বার্থে রাষ্ট্রকে বিচার বিভাগ গঠন  এব্য সৎ দক্ষ বিচারক নিয়োগ করতে হয়। কেননা নাগরিকদের সুবিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম কাজ।

৮.অধিকার সংরক্ষণঃ রাষ্ট্রের একটি অপরিতার্য কাজ হলো নাগরিকের অধিকার রক্ষা করা। নাগরিকের এ অধিকারগুলো তাদের জীবন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৯.অন্যান্য কার্যাবলিঃ উপর্যুক্ত কার্যাবলি ছাড়াও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড,জীবন ও সম্পদ রক্ষা,কৃষি,শিল্প ও বাণিজ্য সং ্ক্রান্ত কার্য,যোগাযোগ ও জনহিতকর কার্যাবলি ও রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায়,রাষ্ট্রের কার্যাবলি অত্যবিধ ব্যাপক।জনগণের সামগ্রিক কল্যাণসাধন করাই রাষ্ট্রের গুরুদায়িত্ব।


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post