অর্থকারী ফসল কাকে বলে?
যে সকল ফসল সরাসরি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে চাষ করা হয়, তাদের অর্থকারী ফসল বলে। অর্থকারী ফসলের মধ্যে পাট, চা, আখ, রেশম, রাবার ও তুলা প্রধান।
আরো পড়ুন:- সিন্ধু সভ্যতা কোন যুগের সভ্যতা?
বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল
বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হলো পাট। পাট বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শিল্পও বটে। পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পাট বাংলাদেশে উৎপন্ন হয়। বৈদিশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে পাটকে ‘সোনালী আঁশ’ বলা হয়।
পাটকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা:- ১। সাদা , ২। তোষা এবং ৩। মেছতা। তোষা পাট থেকে উন্ নমানের আঁশ পাওয়া যায় । ময়মনসিংহ-ঢাকা-কুমিল্লা অঞ্চল বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ‘পাটবলয়’ । দোঁ-আশ মাটি পাট চাষের জন্য বেশি উপযোগী। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ভরা বর্ষার সময় যখন নালা, ডোবা, খাল-বিল পানিতে ভরে ওঠে, তখন পাট কাটা হয়। সনাতন পদ্ধতিতে নিকটবর্তী জলাশয়ে পাট জাগ দিয়ে পচন পক্রিয়ায় আঁশ ছাড়ানো হয়। একটি কাঁচা পাটের গাঁইটের ওজন ৪.৫ মণ।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল:
চা বাংলাদেশের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল। এর আদিবাস চীন। পাহাড় ও প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেট অঞ্চলের চা চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। চা চাষের জন্য আবাদি এলাকার ৪০ শতাংশ চায়ার প্রয়োজন হয়। এ মাত্রার কম বা বেশি চা চাষের জন্য অনুপযোগী। এর পরিমাণ সূর্যকিরণ নিশ্চিতের জন্য চা বাগানে নির্দিষ্ট দূরত্বে সমান্তরালভাবে চায়ের চারা এবং ছায়াবৃক্ষ (Shade tree) রোপণ করা হয়। ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম শহরের বর্তমান চট্টগ্রাম ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা কুণ্ডদের বাগান নামে পরিচিত। বাগানটি প্রতিষ্ঠার পরপরই বিলুপ্ত হয়ে যায়। অতঃপর ১৮৫৪ সালে(মতান্তরে ১৮৪৭ সালে) সিলেট শহরের এয়ারপোর্ট রোডের কাছে মালনীছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত মালনীচড়াই বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক চা বাগান। সম্প্রতি পঞ্চগড়ে অর্গানিক চা উৎপাদন শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশের তৃতীয় প্রধান অর্থকরী ফসল:
ওয়ারেন হেস্টিংস এর উদ্যোগে বাংলায় আলু চাষের বিস্তার লাভ করে। নেদারল্যান্ড থেকে আলু বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশের চতুর্থ প্রধান অর্থকরী ফসল:
অধিক বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চল চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, এবং সিলেটে রাবার উৎপন্ন হয়। ১৯৬১ সালে কক্সবাজারে রামুতে দেশের প্রথম রাবার বাগান করা হয়।
রেশম:
রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া অঞ্চলে রেশম ( Silk) চাষ হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রেশম গুটির চাষ হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
তুলা:
যশোর অঞ্চল তুলা চাষের জন্য বেশে উপযোগী।