ক্ষমতা কাকে বলে?ক্ষমতা স্বতস্ত্রীকরণ নীতি কী?

 ক্ষমতা কাকে বলে?

ক্ষমতা স্বতস্ত্রীকরণ নীতি কী? আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বতস্ত্রীকরণ নীতির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা।

ক্ষমতা কাকে বলে?


উওরঃ

ভূমিকাঃ 

আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এর কার্যবলির বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের এসব কার্যাবলি তিনটি বিভাগের উপর ন্যস্ত থাকে। যথা: আইন বিভাগ ,শাসন বিভাগ িএবং বিচার বিভাগ। সরকারের তিন ধরনের কাজে তিন ধরনের বিভাগ নিয়োজিত থাকবে,এ মূলকথা থেকেই ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ কথাটির উৎপওি হয়েছে। এরিস্টলে ,সিসেরা,জ্যাঁ,বোঁদা ,জন লক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছেন।তবে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের বিভক্তিকরণের সম্পর্কে সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত্র মতামত ব্যক্ত করেছেন ফরাসি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মন্টেস্কু।

ক্ষমতাঃ স্বতন্ত্রীকরণ নীতিঃ সাধারণভাবে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বলতে বুঝায় রাষ্ট্রের আইন,শাসন ও বিচার ক্ষমতা পৃথক ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির হাতে ন্যস্ত করা এবং এক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি অন্য বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।সরকারি ক্ষমতা আইন বিভাগ,শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ এ তিনটি ভাগে বিভক্ত।আর যখন এ তিনটি বিভাগের ক্ষমতা একই হাতে কেন্দ্রীভূত না করে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি বা দলের উপর অর্পণ করা হয় এবং স্ব -স্ব স্বাধীনতা বজায় রেখে কাজ সমাধ্য করতে পারে এবং  একের উপর অন্যর কোন হস্তক্ষেপ হয় না,তখন একে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ বলা হয়।

প্রমাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাঁদের কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো: 

 ক্ষমতা কাকে বলে?

R. C. Agarwall এর মতে,  ``Where al the powers of the goverment are not be concentrated in the hande of on organ is called separation of powet.'
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রবক্তা ফরাসি রাষ্ট্রচিন্তাবিদ মন্টেস্কু ((Montesquieu) বলেছেন,‘‘ক্ষমতা পৃথকীকরণ নীতি বলতে এমন এক নীতিকে বুঝায়,যেখানে সরকারের তিনটি বিভাগের ক্ষমতা পৃথক হবে এবং কেউ কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ করবে না।’’
লিপসন (Lipson) এর মতে,‘‘ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ হলো সংবিধান অনুসারে সরকারের ক্ষমতা পৃথকীকরণ যা  যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।’’
মেডিসন(Madison)  এর মতে,‘‘ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ হলো  সরকারের তিনটি বিভাগের উপর ক্ষমতার পৃথক পৃথক ব্যবহার ও নিশ্চিত প্রয়োগ ,যেখানে একে অপরের এখতিয়ারে হস্তক্ষেপমুক্ত।’’
প্রফেসর এন্ডু হেকার (prof. Amdrew Hacker) এর মতে  ,‘‘ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মুল অর্থ হলো আইন,বিচার ও শাসন বিভাগের কার্যাবলি ভিন্ন হবে এবং এ তিনটি বিভাগ স্বতন্ত্র শাখা দ্বারা পরিচালিত হবে।’’
প্রফেসর ওয়েড এবং ফিলিপস(Prof. Wade and philips) এর মতে,ক্ষমতা স্বতন্তীকরণ বলতে নিম্নলিখিত বিষয়কে বুঝায়।-
১.একই ব্যক্তি সরকারের তিনটি বিভাগের একটির বেশিতে বসতে পারবে না।যেমন-মন্ত্রিগণ পার্লামেন্টে বসবে না।
২.এক বিভাগ অন্য বিভাগকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্যণ বা হস্তক্ষেপ করবে না।
৩.এক বিভাগ অণ্য বিভাগকে কাজ করবে না। যেমন-মন্ত্রিদের কখনই আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে না।সুতরাং ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মূলকথা হল:
১.সরকারের যাবতীয় ক্ষমতা ও কার্যাবলি এর তিনটি বিভাগ -আইন ,শাসন ও বিচার বিভাগের মধ্যে বন্টিত থাকবে
২.কোন বিভাগ কোন বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করবে না।
৩.প্রতিটি বিভাগ স্বীয় দায়িত্ব পালনে স্বাধীন েএবং চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী।
৪.একজন ব্যক্তি একই সাথে একটির বেশি শাখায় দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।
ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির গুরুত্ব ও তাৎপর্যঃ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বন্ত্রীকরণ নীতিটি অপরিহার্য। নিম্নে ক্ষমতা স্বন্তীকরণ নীতির গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষায়ঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অন্যতম কাজ হচ্ছে ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা করা।ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার জন্য পয়োজন বিচার বিভাগের স্বাধীণতা । আর ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণের মাধ্যমেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করা যায়। মন্টেস্কু তাঁর  গ্রন্হে বলেন,‘‘যখন একই ব্যক্তি বা একই শাসকবর্গের হাতে আইন রচনা এবং শাসন করার ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয় তখন জনগণের স্বাধীনতা থাকবে না।’’(When the legislative and executive powers are united in the same person or the governing body there can  be no freedom.)
২.স্বৈরাচারিতা রোধের ক্ষেত্রে ঃ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান রচনার অন্যতম তিন দিকপাল জেফারসন,হ্যামিলটন ও মেডিসন তাদের `Federa;est' গ্রন্হে বলেন,‘‘রাষ্ট্রের আইন,শাসন ও বিচার বিভাগীয় সকল ক্ষমতা একক হাতে অর্জণের অর্থ দেশে স্বৈরাচারী সরকার প্রতিষ্ঠা।’’ েএজন্য ষ্বৈরাচারিতা রোধে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বিশেষ উপযোগী। কাজেই বিভিন্ন বিভাগের ক্ষমতা বিভিন্ন ব্যক্তির উপর ন্যস্ত করলে স্বৈরাচারী হতে পারে না।
৩. সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধিঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অন্যতম গুণ হল এই যেেএই নীতি প্রয়োগের ফলে সরকারের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। কেননা প্রতিটি বিভাগই অন্যঅন্য বিভাগের এখতিয়ারভূক্ত কাজ থেকে নিজেকে প্রথক রেখে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন যথাযথ  এবং ঝামেলামুক্তভাবে সম্পাদন করতে পারে। এর ফলে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। কারণ এ নিতি পয়োগের ফলশ্রুতিতে প্রত্যেক বিভাগ একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
৪.বিশেষজ্ঞ সৃষ্টিঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের মাধ্যমে সংশিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তিদের হাতেই সরকারি দায়িত্ব অর্পন করা হয়। স্বতন্ত্রীকরণ অর্থ এক বিভাগ হতে অপর বিভাগকে সম্পূর্ণ পৃথক করা নয়। বরং একটি বিশেষ ক্ষেত্রে দক্ষ ্যিক্তিদের মাধ্যমে সেক্ষেত্রে সরকারি কাজ সঠিকভাবে সম্পাদন করার মাধ্যমে তাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ প্রদানই স্বতন্ত্রীকরণের উদ্দেশ্য। সতুরাং স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মাধ্যমে সরকারের প্রতিটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাদের কাজে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেন।
৫.গনতন্ত্র রক্ষাঃ গণতন্ত্র রক্ষায় এ নীতির প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন বিরোধ সংঘটিত হলে বিচার বিভাগ এক্ষেত্রে শাসন বিভাগের হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে সঠিক রায় প্রদান করে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে পারে।
৬.নিয়ন্ত্রণমুক্ত বিভাগঃ সরকারের সকল ক্ষমতা-েএকক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা একটি বিভাগের হাতে পুঞ্জীভূতকরণের অর্থ হল সকলকে জিম্মি করে রাখা। কেননা তখন বিভিন্ন বিভগসমূহ নিয়োজিত ব্যক্তিগণ স্বত:স্ফূর্তভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের ফলে প্রত্যেক্ষ বিভাগ নিয়ন্ত্রণমুক্তভাবে কার্য সম্পাদন করতে পারে।
৭.মৌলিক অধিকার সংরক্ষণঃ বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতামূলক ভুমিকার মাধ্যমে শাসনবিভাগের অন্যায় অযৌক্তিক নীতিকে বাধু প্রদানের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত হতে পারে।
৮.ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ না হলে সমাজ ও রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্টা করা সম্ভব নয়। কারণ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্যণ ও প্রভাব হতে মুক্ত রাখা আবশ্যক। কেননা িএকে আইন বা শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখতে না পারলে জনগণের স্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না। বিচারকের বিবেক তখন সরকারের প্রভাবশালীদের স্বার্থের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে।
৯.রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিঃ রাজনৈতিক সচেনতা একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ রাজনৈতিক দীক্ষাদানে এ নীতির প্রয়োগ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
১০.জরুরি অবস্হায় উপযোগীঃ জরুরি অবস্হায় এ নীতির প্রয়োগ সফল হতে পারে। কেননা এখানে শাসন বিভাগ আইনসভার নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করতে পারে।
১১.আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাঃ বিচারপতি শাসন বিভাগের অন্যঅয় হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ফলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। 
১২.দুনীর্তি রোধঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি প্রয়োগের ফলে প্রতিটি বিভাগই অন্য বিভাগের হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। ফলে দুনীর্তি রোধ করা সম্ভব হয়। 
১৩.বৈজ্ঞানিক নীতি অনুশীলনঃ বৈজ্ঞানিক উপায়ে রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে উক্ত নীতি অনুশীলন খুবই অফরিহার্য।কর্মের শ্রেণিকরণ নীতি হচ্ছে আধুনিক ব্যব্হাপনার অন্যতম মৌলিক নীতি। কেননা তার অনুশীলনকে যথাযথভাবে নিশ্চিতকরণার্থে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি একান্ত প্রয়োজন।
উপসংহারঃ উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়,আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে প্রতিটি দেশে গণতন্ত্র বিকাশের সাথে সাথে মন্টেস্কুর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ বর্তমানে সরকারের কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ক্ষমতার ভারসাম্যেল প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সুবিধাসমূহ আলোচনা কর।

Power  বা ক্ষমতা হচ্ছে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। সমাবদ্ধ মানুষ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়ার পর থেকে ক্ষমতা রাজনীতির এক ব্যাপক বিষয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এ ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষিত না হলে নাগরিকের মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ণ হয়। এজন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ব্যক্তিস্বাধীনতা মতবাদের বিকাশের সাথে সাথে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ বা পৃথকীকরণ নীতির গুরুত্ব ও তাৎপর্য বৃদ্ধি পায়। যদিও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হলো ক্ষমতা,তথাপি কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা একদিকে যেমন সরকারেকে স্বৈরাচারী করে তুলে অন্যদিকে তেমনি নাগরিক স্বাধীনতাও ক্ষুণ্ন করে। তাই সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা রোধ ও নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষার্থে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি উদ্ভাবন করেছেন।
ক্ষমতা স্বন্ত্রীকরণ নীতির সুবিধাসমূহঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অনেকগুলো সুবিধা বা গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যমান রয়েছে । নিম্নে তা আলোচনা করা হলো:
১.সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধিঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অন্যতম গুণ হলো এই যে ,এ নীতি প্রয়োগের ফলে সরকারের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় কেননা প্রতিটি বিভাগিই অন্যান্য বিভাগের  এখতিয়অরভূক্ত কাজ থেকে নিজেকে পৃথক রেখে তার উপর অপিত দায়িত্ব পালন যথাযথভাবে এবং ঝামেলঅমুক্তভাবে সম্পাদন করতে পারে। এর ফলে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় । কারণ এ নীতি ্  প্রয়োগের ফলশ্রুতিতে প্রত্যেক বিভাগ একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
২.স্বৈরাচারিতা রোধের ক্ষেত্রেঃ স্বৈরাচারিতা রোধে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বিশেষ উপযোগী । কেননা সরকারের সকল ক্ষমতা একজন ব্যক্তির হাতে থাকলে সে ব্যক্তি স্বেচ্ছারী শাসকে পরিণত হতে পারে।কাজেই সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ক্ষমতা বিভিন্ন ব্যক্তির উপর ন্যস্ত করলে স্বেচ্ছচারী হতে পারে না। অতএব ,ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা রোধ করে।
৩.ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষায়ঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো যে,এটি ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা করবে। ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রয়োজন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা,আর ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণের মাধ্যমেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করা যায়। কাজেই বলা যায়,ক্ষমতার ব্বতন্ত্রীকরণের মাধ্যমে ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা হয়।
৪.বিশেষজ্ঞ সৃষ্টিতে সহায়কঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মাধ্যমে সরকারের প্রতিটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাদের কাজে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেন। অতএব বলা যায়, ক্ষতমার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ব্যক্তিগণ ধীরে ধীরে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেন।
৫.গণতন্ত রক্ষাঃ গণতন্ত্র রাক্ষায়  এই নীতির প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন বিরোধ সংগঠিত হলে বিচার বিভাগ এক্ষেত্রে শাসন বিভাগের হস্তক্ষেপ মুক্ত থেকে সঠিক রায় প্রদান করে গণতন্তকে সমুন্তত রাখতে পারে।
৬.মৌলিক অধিকার সংরক্ষণঃ বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতামূলক ভূমিকার মাধ্যমে শাসন বিভাগের অন্যায় অযৌক্তি নীতিকে বাধা প্রদানের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত হতে পারে।
৭.নিয়ন্ত্রণমুক্ত বিভাগঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির অন্যতম সুবিধা হলেঅ েএর এক বিভাগ অন্য বিভাগের প্রভাবমুক্ত।ফরৈ প্রত্যেকটি বিভাগ স্বাধীনভাবে কার্যসম্পাদানে সচেষ্ট থাকে। ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ ঘটলে দেশের দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব হবে। কেননা একটি বিভাগ স্বীয় স্বার্থে অন্য বিভাগের উন্নয়নে বাধা প্রদান করতে পারবে না।
৮. জরুরি অবস্হার উপযোগীঃ জরুরি অবস্হায় এ নীতির প্রয়োগ সফল হতে পারে। কেননা এখানে শাসন বিভাগ আনসভার অযথা নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করতে পারে।
৯.বৈজ্ঞানিক নীতি অনুশীলনঃ বৈজ্ঞানিক উপায়ে রাষ্ট্র ব্যবস্হাপনার ক্ষেত্রে উক্ত নীতি অনুশীলন খূবই অপরিহার্য।কর্মের শ্রেণিকরণ নীতি হচ্ছে আধূনিক ব্যবস্হাপনার অন্যতম মৌলিক নীতি। কেননা তার অনুশীলনকে যথাযথভাবে নিশ্চিতকরণার্থে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি একান্ত প্রয়োজন।

উপসংহারঃ 

আলোচনার শেষ প্রান্তে এসে আমারা বলতে পারি আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্হায় জনগণেল অধিকার রক্ষা,সরকারের স্বৈরাচারিতা রোধ করে সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকর নীতির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে যাতে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি বজায় থাকে সে দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post