দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক লিখ।দর্শন ও ধর্মের মধ্যে মিল খুঁজে বের কর।দর্শন ও ধর্ম পরস্পর নির্ভরশীল কীভাবে?দর্শন কীভাবে ধর্মের সাথে সম্পর্কিত?দর্শন ও ধর্মের

দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক লিখ।দর্শন ও ধর্মের মধ্যে মিল খুঁজে বের কর।দর্শন ও ধর্ম পরস্পর নির্ভরশীল কীভাবে?দর্শন কীভাবে ধর্মের সাথে সম্পর্কিত?দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য লিখ।

০১. দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক লিখ।দর্শন ও ধর্মের মধ্যে মিল খুঁজে বের কর।দর্শন ও ধর্ম পরস্পর নির্ভরশীল কীভাবে?দর্শন কীভাবে ধর্মের সাথে সম্পর্কিত?দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য লিখ।






উওরঃ
ভূমিকাঃ
দর্শন জীবন ও জগতের সমস্যাবলির ব্যাখ্যা ও মূল্যায়ন করে থাকে। মানুষের জ্ঞানের েএমন কোন দিক নেই,মানুষের ্আলোচনার এমন কোন মৌলিক বিষয় নেই যা দর্শনের অন্তর্ভূক্ত নয় । দৈনর্দিন জীবনের দর্শনেই আমাদেরকে সর্বজনীন ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয় সহিষ্ণু ও উদার হওয়ার শিক্ষা দেয়। দর্শন কোন বিশেষ বিভাগের বিশেষ জ্ঞান প্রদান করে না, বরং সামগ্রিক অখন্ড দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জীবন ও জগতের ব্যাখ্যা করে থাকে। 

দর্শন ও ধর্মের সম্পর্ক বা সাদৃশ্যঃ দর্শন ও ধর্মের যেসব সম্পর্ক রয়েছে সেগুলো নিম্নে উল্লেক করা হলঃ

১.উৎপতির দিক থেকেঃ উৎপওির দিক থেকে দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। দর্শন উৎপওির মূলে যেমন সংশং কার্যকারী তেমনি ধর্মর  ক্ষেত্রেও সংশয় কার্যকরী। 
২.লক্ষ্যের দিক থেকেঃ দর্শন ও ধর্মের লক্ষ্য েএক ও অভিন্ন। দর্শন ও ধর্ম উভয়ই চায় পরমসওার সন্ধান লাভ করতে এবং একই সাথে ব্যাপক মানবকল্যাণে ব্রতী হতে। তাই দর্শন ও ধর্ম উভয়ের লক্ষ্য জগৎ ও জীবনের উগঘাটন করে সত্যঅনসন্ধঅন করতে। 
৩.আলোচ্যবিষয়ের দিক থেকেঃ দর্শন ও ধর্ম একই ধরনের কতকগুলো সমস্যা যেমনঃ জগতের সৃষ্টিতও্ব, আত্নার অমরত্ব, পরমতও্ব ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। উভয়ই বিশ্বজগতে মানুষের স্থান, কাজ ও ভাগ্যের বিষয়  নিয়েও আলোচনা করে। ৪.গুনগত দিক  থেকেঃ দর্শন যেমন কোন বস্তুর গুণগত দিক নিয়ে আলোচনা করে ,তেমনি ধল্মও বস্তুর গুণগত দিক নিয়ে আলোচনা করে। সুতরাং উভয়ের সম্পর্কে গভীর। 
৫.মানবকল্যাণের ক্ষেত্রেঃ দর্শন যেমন মানুষের কল্যাণ নিয়ে আলোচনা করে তেমনি ধর্মও মানুষের কল্যাণ নিয়ে আলোচনা করে। সুতরাং উভয়ের লক্ষ্য  মানবকল্যাণ।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, দর্শন ও বিজ্ঞান ্‌উভয়ের কাজ হল মানুষের কৌতুহলকে দূরীভূত করে বিশ্বজগতের রহস্য উদঘাটন করা। সুতরাং দর্শন ও ধর্ম উভয়ই বিশ্বজগতের মানুষকে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে সুন্দর ,সুখী ও শান্তিপূর্ণ পরিবেম গড়ে তুলতে সাহায়্য করতে পারে। 

০২.ধর্ম বলতে কী বুঝ?ধর্ম কাকে বলেে? উপওিগত অর্থে ধর্মের সংজ্ঞা দাও। ধর্ম কী?

উওরঃ
ভূমিকাঃ দর্শন  এমন একটা বিষয়, যা জগৎ ও সওার প্রকৃত স্বরূপ ও অর্থ জানার জন্য একটা বিচারমূলক বিদ্যা। দর্শন জগৎ ও সওার বিচারমূলক আলোচনা করতে গিয়ে জীবন ,মূল্য,জ্ঞান ইত্যাদি বিষয় আলোচনার করে থাকে । এ ধরেণের আলোচনা করতে গিয়ে দর্শন শুধূ মৌলিক ধারণার পরিষ্কারক এবং মৌলিক বিশ্বাসের সমীক্ষণ করে না,বরং সংশ্লেষণেল মাধ্যমে জগৎ ও জীবনের  একটা সুষ্ঠু ব্যাখ্যা দেয়া ও মূল্যায়নের প্রচেষ্টা চালায়। 
ধর্মঃ ধর্ম হচ্ছে এক ধরনের বিশ্বাস এটা এমন এক অতিপ্রাকৃত শক্তিতে বিশ্বাস , যা মানুষের জীবনের সকল মূল অনুভূতি ও  ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রন করে। এ  অতিপ্রাকৃত সওার নিকট আমরা মাথা নত করি, প্রার্থনা জানাই,অনুগ্রহ কামনা করি। আমাদের সমস্ত কর্মের কারণ এ অতিপ্রাকৃত সওাকেই মনে করি। একে আমরা প্রজ্ঞার মাধ্যমে ও ধর্মীয়  শিক্ষার মাধ্যমে জানতে পারি।

 উৎপওিগত অর্থে ধর্মঃ ধর্মের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Religiob'.Religion শব্দটি উৎপওি হয়েছে ‘Religere'থেকে যার অর্থ যুক্ত বা বন্ধন । আবার ধর্ম উদ্ভুত হয়েছে সংস্কেৃত ‘ধৃ’ ধাতু থেকে। ‘ধু’ মান ধারণা করা। সুতরাং উৎপওিগত দিক থেকে ধর্ম হল সে ব্যবস্তা যা মানুষকে ধারণ বা পোষণ করে। 

বিভিন্ন চিন্তাবিদ বিভিন্নভাবে ধর্মর সংজ্ঞা দিয়েছেন।নিম্নে তাদের কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলঃ
উইলিয়াম লিলি (William Lillie) ধর্ম সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘ধর্ম হল অতিপ্রাকৃত সওায় বিশ্বাস ,যা বিশ্বাসকারীকে আবেগজনিতভাবে প্রভাবিত করে  এবং তাকে অতিপ্রাকৃত সওার দিকে চালিত করে কতকগুলো ত্রিয়া সম্পাদান করতে বাধ্য করে।’’Oxford Dectionary তে ধর্ম সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘‘ধর্ম হল উচ্চতর অদৃশ্য শক্তিকে স্বীকার করে নেয়া, যা মানুষের আনুগত্য, শ্রদ্ধঅ এবং উপাসনা পাওয়ার অধিকারী।’’

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, ধর্ম হল এমন এক বা একাধিক অতীন্দ্রিয় সওা শক্তিতে বিশ্বাস যা মানুষের ভাগ্য ও গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ অদৃশ্য অতীন্দ্রিয় শক্তিতে বিশ্বাসই ধর্মের মূলমন্ত্র। সুতরাং সত্যের ক্ষেত্রে ধর্ম কখনও মিথ্যা বা অসত্যের সাথে আপস করে না ।


০৩.দর্শনের সাথে ধর্মের সম্পর্ক আলোচনা কর।দর্শনের সাথে ধর্ম কীভাবে সম্পর্কিত?ধর্শন কীভাবে ধর্মের সাথে 

উওরঃ
ভূমিকাঃ
দর্শন জীবন ও জগতের সমস্যাবলির সামগ্রিক ব্যাখ্যা ও মূল্যায়ন করে থাকে। দার্শনিক জ্ঞানের অখন্ডতা এর বিশাল বিস্তৃতির নির্দেশক। মানুষের জ্ঞানের এমন কোন দিক নেই। মানুষের আলোচনার এমন কোন মৌলিক বিষয় নেই যা দর্শনের অন্তর্ভুক্ত নয়। দৈনন্দিন জীবনে দর্শনেই আমাদেরকে সর্বজনীন ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সহিষ্ণ ও উদার হওয়ার শিক্ষা দেয়। দর্শন কোন বিশেষ বিভাগের বিশেষ জ্ঞান প্রদান করে না, বরং সামগ্রিক অখন্ড দৃষ্টিকোণ থেকে জীবন ও জগতের ব্যাখ্যা করে থাকে। 
দর্শনঃ গ্রিক দার্শনিক থেলিস (Thales)[624-446] থেকে দর্শনের শুরু হয়েছিল। তবে ফিলসফি (Philosophy)কথাটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন ফ্রিষ্টপূর্ব দু‘শতকের ‍গ্রিক চিন্তাবিদ পিথাগোরাস । থেলিস বলেন,জগতের সমুদয বস্তু পানি থেকে সৃষ্টি  হয়েছে। আজ্নকাল থেকেই মানুষের জগৎ ও জীবনকে জানার আগ্রহ রয়েছে। অস্বাভাবিক সমস্যার সম্মুখীন হলেই মানুষ চিন্তা বা বিচার বিশ্লেষনের মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা করার প্রচেষ্টা চালায়। এ ধরনের প্রচেষ্টাই দার্শনিক সুলভ প্রচষ্টা। 
দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক আলোচনার পূর্বে আলোচনার পূর্বে ধর্ম বলতে কি বুঝায় তার একটা সুস্পষ্ট ধারণা আমাদের থাকা দরকার।
ধর্মঃ ধর্ম হচ্ছে এক ধরনের বিশ্বাস। এটা এমন এক অতিপ্রাকৃত শক্তিতে বিশ্বাস, যা মানুষের জীবনের সকল মূল অনুভূতি ও  ক্তিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এ অতিপ্রাকৃত সওার নিকট আমরা মাথা নত করি, প্রার্থনা জানাই, অনুগ্রহ কামনা করি। আমাদের সমস্ত কর্মের কারণ এ অতিপ্রাকৃত সওাকেই মনে করি। একে আমরা প্রজ্ঞার মাধ্যমে ও ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে জানতে চাই। 
ব্যুৎপওিগত অর্থে ধর্মঃ ধর্মের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Rilgiob.'Religion শ্বদটি উৎপওি হয়েছে‘Religere'থেকে যার অর্থ যুক্ত বা বন্ধন। আবার ধর্ম উদ্ভূত হয়েছে সংস্কৃত ‘ধৃ’ ধাতু থেকে । ‘ধ’ মানে ধারণ করা। সুতরাং ব্যুৎওির দিক থেকৈ ধর্ম  হল সেই ব্যবস্থা যা মানুষকে ধারণ বা পোষণ করে। 
Willam Lillie ধর্ম সম্পর্কে বলেছেন,‘‘ধর্ম হল অতিপ্রাকৃত সওায় বিশ্বাস , যা বিশ্বাসকারীকে আবেগজনিতভাবে প্রভাবিত করে  এবং তাকে অতিপ্রাকৃত সওার দিকে চালিত করে কতকগুলো ক্রিয়া সম্পাদন করতে বাধ্য করে।’’
জে . এস.ম্যাকাঞ্জি (J. S. Mackenhie)ধর্ম সম্পর্ক বলেছেন,‘‘Religion means essentially a certain absolute devotion to  what is congnised.as highest and most valuable .''(ধর্মের অর্থ হচ্ছে একটা অদৃষ্ট শক্তিতে স্বীকার করে নেয়া। যাকে সবচেয়ে বেশি মূল্যবান মনে করি এবং তার প্রতি আমরা সম্পূর্ণরূপে চূড়ান্ত আত্নোৎসর্গ করি।)
সুতরাং বলা যায়, ধর্ম হল এমন ্এক বা একাধিক অতীন্দ্রিয় সওা শক্তিতে বিশ্বাস যা মানুষের ভাগ্য েএবং গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ অদৃশ্য অতীন্দ্রিয় শক্তিতে বিশ্বাসেই ধর্মের মূলমন্ত্র
দর্শন ও ধর্মের সম্পর্কঃ দর্শন ও ধর্মের মধ্যে যেসব বিষয়ে সম্পর্ক রয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হলঃ
১.উৎপওির দিক থেকেঃ উৎপওির দিক থেকে দর্শন ও ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। দর্শন উৎপওির মূলে যেমন সংশয় কার্যকরী তেমনি ধর্মের ক্ষেত্রে সংশয় কার্যকরী। 
২.লক্ষ্যের দিক থেকেঃ দর্শন  ও ধর্মের লক্ষ্য অভিন্ন। দর্শন ও ধর্ম উভয়েই চায় পরমসওার সন্ধঅন লাভ করতে এবং একই সাথে ব্যাপক মানবকল্যাণে ব্রতী হতে। সুতরাং দর্শন ও ধর্ম উভয়েরই লক্ষ্য জগৎ ও জীবনের রহস্য উদঘাটন করে সত্যানুসন্ধান করা ।
৩.আলোচ্য বিষয়ের দিক থেকে দর্শন ও ধর্মঃ উভয়ই একই  ধরনের কতকগুলো সমস্যা যেমন-জগতের সৃষ্টতও্ব,আত্নার অমরত্ব,পরমতও্ব ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। উভয়ই বিশ্বজগতে মানুষের স্থান ,কাজ ও ভাগ্যের বিষয় নিয়েও আলোচনা করে। 
৪.সত্যানুসন্ধঅনে আপসহীন ভূমিকাঃ সত্যের ক্ষেত্রে দর্শন ও ধর্ম উভয়েই কখনও  মিথ্যা বা অসত্যের সাথে আপস করে নয়।
৫.গুণগত দিকে থেকেঃ দর্শন যেমন কোন বস্তুর গুণগত দিক  নিয়ে আলোচনা করে তেমনি ধর্মও বস্তুর গুণগত দিক নিয়ে আলোচনা করে। সুতরাং উভয়ের সম্পর্ক খুবই গভীর ।
৬.সঠিক পথ নির্দেশনার দিক থেকেঃ দর্শন ও  বিজ্ঞান উভয়ই আমাদের সত্য-মিথ্যা, ভালো-মন্দ,পাপ-পুণ্য,ন্যায়-অন্যায় প্রভৃতির প্রতি সঠিক পথ নির্দেশনা দেয়।
৭.মানবকল্যাণের ক্ষেত্রেঃ দর্শন যেমন মানুষের কল্যাণ নিয়ে আলোচনা করে তেমনি ধর্মও  মানুষের কল্যাণ নিয়ে আলোচনা করে। সুতরাং উভয়ের লক্ষ্য মানবকল্যাণ। 
৮.ঈশ্বরতও্বের ক্ষেত্রেঃ দর্শন ও ধর্ম উভয়ই ঈশ্বরতও্ব নিয়ে আলোচনা করে। 
উপসংহারঃ উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, দর্শন ও ধর্ম উভয়ের কাজ মানুষেল কৌতূহলকে দূরীভূত জন্য বিশ্বজগতের রহস্য উদঘাটন করা। এ রহস্যকে উদঘাটন করতে গিয়ে বা সত্যকে জানতে গিয়ে দর্শন ধর্মের ভিওিকে মূল্যায়নের মাধ্যমে আরও মজবুত করে তোলে। সুতরাং দর্শন ও ধর্ম উভয়ই বিশ্বজগতের মানুষকে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত করের সুন্দর ,সুখী ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। 


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post