জড় কী? জড় বলতে কী বুঝ?

  •  জড় কী?জড় বলতে কী বুঝ?
জড় কী?জড় বলতে কী বুঝ?


উওরঃ

ভূমিকাঃ

যথার্থ দর্শনের প্রথম সমস্যা হল জড়ের প্রকৃতি নিরুপণ করা। দর্শন জগৎ ও জীবনের সাথে জড়িত বিভিন্ন মৌলিক সমস্যাবলি নিয়ে আলোচনা করে। আর দর্শনের বিভিন্ন সমস্যাবলির মধ্যে সওা সম্বন্ধীয় সমস্যাটি অন্যতম।সওা মানে মৌলিক উপাদান। এ পরিদৃশ্যমান জগতের আড়ালে যে মূল উপদান রয়েছে তা জড় না আধ্যাত্বিক এ নিয়ে দর্শন েমূলত দুটি মতবাদ গড়ে উঠেছে। যারা মনে করেন এ জগতের আদি উপাদান বা আদিসওা হল জড়াত্বক,তাদের মতবাদকে জড়বাদ বলা হয়।

জড় বা জড়বাদঃ  জড় হল জাগকি বস্তুর মূল উপাদান। জাগতিক বস্তুর পরিবর্তন সাধিত হতে পারে। কিন্তু জড়ের কোন পরিবর্তন সাধিত হয়না। কেননা,জড় হচ্চে জাগতিক বস্তুর মৌলিক উপাদান। উদারহরণস্বরূপ বলা যায় েকোন  একটি ফুল ফলে পরিণত হতে পারে বা মাটিতে ঝরে পড়তে পারে। কিন্তু ফুলের এ পরিবর্তন সও্বে আমরা ধারণা করি না যে ,ফুলের উপাদান বিনষ্ট হয়েছে।

Materialism এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে জড়বাদ বা বস্তুবাদ ।জড়বাদ এমন একটি তও্ববিদ্যকে মতবাদ (Onto Logica Theory)  যে মতবাদ মনে করে জড় হল জগতের  ্আদি উপাদান যা জগতের সবকিছুর মূলেই রয়েছে । কেননা ,জড় থেকেই বিশ্বের সৃষ্টি। ‘‘ জড় কী?জড় বলতে কী বুঝ‘‘Self exisled attoms uf matter are the composed of matter are the consituent eliments .''জগৎ কতকগুলো সাধারণ মৌলিক উপাদান দিয়ে তৈরি । এ উপাদানগুলোই জড় বা জড়বস্ত।

জড়বাদ ভাববাদের সম্পূর্ণ বিপরীত মতবাদ। এ জগৎ জড়ে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ফল। এ জগতের মূলে রয়েছে জড়পদার্থ। এ জগৎ জড়ে,গতি,শক্তির মাধ্যমে যান্ত্রিক নিয়মে সৃষ্টি অথবা দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতে সৃষ্টি হয়েছে।

patrick এর মতে ``Materialism is the theory that matter is one and only kind of being the primary substance,the universe is a material world and all objects of experience are composed of matter,mind is a from of function of matter.''(pag-200)অর্থাৎ ,অজড়বাদ অনুসারে জড় হচ্চে বিশ্বজগতের একটি আকার।

 হর্নলি তার `Matter,Life and God' গ্রন্থ বলেচেন,জড়বাদ প্রকৃতি অথবা এর জীবন্ত অংশকে স্রষ্টার সৃষ্টি হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার জানায়। এটি যে কোন প্রকার অতি প্রাকৃতিক সওার বিশ্বাসের বিরোধী।

উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে ,জড় হচ্ছে জগতের আদি উপাদান যা জগতের সবকিছুর মূলেই রয়েছে জাগতিক বস্তুর পরিবর্তন সাধিক হতে পারে। কিন্তু জড়ের কোন পরিবর্তন সাধিত হয় ্না । সুতরাং জড় হচ্ছে বিশ্বজগতের একমাএ আদি উপাদান।

জড় সম্পর্কে ডেকাটের মতামত লিখ।

উওরঃ

 ভূমিকাঃ

 দর্শনের  ইতিহাসের জড়ের ধারণা একটি গুরুত্বপূ্ণ স্থান দখল করে আছে। জড় পার্থিব সওার একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য ।জড় স্থায়ী সওা ও সর্বব্যাপক। জড় বলতে আমরা এমন এক সওাকে বুঝি যা বস্তুর পরিবর্তনের মধ্যেও অপরিবর্তিত থাকে। সাধারণ মানুষ জড়ের অস্তিত্বে বিশ্বাসী হলেও জড়ের স্বরূপ সম্পর্কে তারা কোন সুনর্দিষ্ট ধারণা পোষণ করে না। তবে বিভিন্ন দার্শনিক জড় সম্পর্ক ব্যাখ্যা দান করে। 

জড় সম্পর্কে ডেকার্টের মতবাদঃ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির ্সাথে সঙ্গতি রেখে যেসব আধুনিক দার্শনিক  জড় সম্পর্কে মতবাদ ব্যক্ত করেন তাদের মধ্যে ডেকার্ট ছিলেন অন্যতম। আধুনিক দর্শনের জনক ছিলেন ডেকার্ট । ডেকার্রে মতে, জড়  এবং বিস্তৃতি হলো সমার্থক শব্দ। তাঁর মতে, এ বিশ্বজগতের সব কিছুর মূলে মাএ দুটি সওা আছে। এ দুটি সওা হচ্ছে জড় এবং মন। জড় মনের বিপরীত। জড়ের প্রধঅন ধর্ম বিস্তৃতি এবং মনের প্রধান ধর্ম চেতনা। জড় যান্ত্রিক নিয়মের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়  এবং মন উদ্দেশের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। জড় হচ্ছে নিস্ত্রিয় েএবং মন সক্তিয়। এ জড় ্ও মন দুটি পরস্পর নিরপেক্ষ পৃথক সওা। ডেকার্ট কো সুষ্টু ও যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা তার মতবাদে দিতে পারে নি ।সেজন্য পরবর্তীকালে এই দ্বৈতাবাদের সূএ ধরে দর্শনের ইতিহাসে এক বিরাট আলোড়নের সৃষ্টি হয়।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে,জড় হচ্ছে এমন একটা কিছু যা গুণবর্জিত ও আকারহীন উপাদান। ডেকার্টের মতে  ,এই বিশ্বজগতের সব কিছুর মূলে জড় ও মন নামে দুটি সওা রয়েছে ।এজন্যই ডেকার্টকে দ্বৈতবাদী বলা হয়।

জড় সম্পর্কে লাইবনিজের মতামত লিখ।

উওরঃ

ভূমিকাঃ

জগতের ্ প্রতিটি বস্তুর সঙ্গে আকারের মূর্ত সম্পর্ক বিদ্যমান। জাগতিক বস্তু ্‌আকার ও জড়ের সমন্বেয়ে গঠিত। তাঁর মতে,জগতের প্রতিটি বস্তু নিয়ত পরিবর্তি হচ্ছে। জড় বলতে পরিবর্তিত হওয়ার শক্তিকে বুঝানো হয়ে থাকে।

জড় সম্পর্কে লাইবনিজের মতবাদঃ লাইবনিজ (১৬৪৬-১৭১৭)ডেমোক্রিটাসের পরমাণুর মতো অসংখ্য পরমাণুতে বিশ্বাসিী ।ডেমোক্রিটাসের পরমাণু হলো জড় পদার্থ,কিন্তু লাইবনিজের পরমাণু  হলো চেতন পদার্থ। লাইবনিজ তার চেতন পরমাণূর নাম িদিয়েছেন চিৎপরমাণু(Monad)এই চিৎপরমাণগুলো বিস্তারহীন মানসিক বিন্দু বা অবিভাজ্য জাগতিক সওা। গতিশিলতা যদিও চিরমাণুর প্রধান বৈশিষ্ট্য,তথাপি প্রতিটি চিৎপরমাণুর মধ্যে সমান গতিশীলতা নেই। অর্থাৎ কোন চিৎপরমাণুর গতি বেশি এবং কোন চিৎপরমাণুর গতি বেশি এবং কোন চিৎপরমাণুর গতি কম।যে চিৎ গতিশীলতা কম তাকে স্তিতিশীল বলে ধরে নেয়া হয় এবং এই স্থিতিশীলতা থেকেই জড়ের ধারণাল উৎপওি হয়। কিন্তু আসলে জড়ের কোন অস্তিত্ব নেই এবং এ হিসেবে বস্তু বা জড় হলো অপেক্ষাকৃত কম গতিসম্পন্ন চিৎপরমাণু।

উপসংহার ঃ পরিশেষে বলা যায় যে ,আধূনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা জড়ের সমস্যার উপর নতুনভাবে আলোকজাত করে মানুষের চিন্তার রাজ্যে এক বিপ্লব এনে দিয়েছে। কেউ বলেন,জড় হল সচল। কেউ বলেন,জড় হল নিশ্চল। মূলত তাদের জড় সম্পর্কীয় ্ এ ্ আলোচনা জড়ের গুণকে কেন্দ্র করে চলে আসছে।

জন সম্পর্কে লকের মতামত লিখ।

উওরঃ

 ভূমিকাঃ

জড় হল জাগতিক বস্তুর মূল উপাদান।জাগতিক বস্তুর  পরিবর্তন সাধিত হতে পারে,কিন্তু জড়ের কোন পরিবর্তন সাধিত হয় না। কেননা জড় হচ্ছে জাগতিক বস্তুর মৌলিক উপাদান। জড় যেমন জাগতিক বস্তুর একটি প্রধঅন বৈশিষ্ট্য তেমনি জড়ের প্রধঅন বৈশিষ্ট্য এই যে,জড় স্থায়ী ও সর্ব ব্যাপক।

জড় সম্পর্কে লকের মতবাদঃ জন লক (১৬৩২-১৭৩৪)একজন ব্রিটিশ দার্শনিক। তাঁর মতে,জড় বা বস্তু কতকগেো গুণের আধঅর ।তাঁর মতে, আমরা বস্তুকে প্রত্যক্ষ করতে পারি না ,বরং বস্তুর গুণাবলিকেই শুধু প্রত্যক্ষ করতে পারি। লকের বস্তুকে জানতে হলে বস্তুর  জানতে হলে বস্তুর ‘গুণ’ সম্পর্কে জানা দরকার । লকের মতে,বস্তুর গুণ দুই প্রকার;যথা:মুখ্য গুণ ও গৌণ গুণ। মুখ্য গুণ হল বিস্তৃতি,ঘনত্ব ,গতি ইত্যাদি এবং এগুলো বস্তু নির্ভরশীল। গৌণ গুণ হল রূস,রস ,গন্ধ,শব্দ ইত্যাদি এবং এগুলো মন নির্ভরশীল।বস্তুর এই গুণগুলো শূন্যে ভাসমান অবস্থায় থাকে না এবং এ গুণগুলোর অস্তিত্বের জন্য একটি আধার আছে। এই আধারই জড়গ বা বস্তু। এই আধঅর যদিও অজ্ঞাত ,তথাপি এক অস্বীকার করা যায়না ।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে ,জড় বলতে বস্তুর মুল উপাদানকে বুঝানো হয়ে থা েক। বিশেষ বস্তুর উদ্ভব ও বিলয় সাধিত হয়,কিন্তু জড়ের ধ্বংস নেই,জড় পরিবর্তনের অধীন নয়। কোন কিছুই জড়কে তার নিজের স্বভাব হতে বিচ্যুত করতে পারেনা । সুতরাং জড় স্থায়ী সওা ও সর্বব্যাপক।

জড় সম্পর্কে বাকলির মতামাত লিখ।

উওরঃ 
ভূমিকাঃ

পাকৃতিক জগতে জড় ও জীবন্ত বস্তুর এক বিপুল সমাবেশ পরিলক্ষিত নয়। িএসব জড় ও জীবন্ত বস্তু নিরন্তর পরস্পরের উপর ক্রিয়া -প্রতিক্রিয়া করে পরস্পরের পরিবর্তনের সাধন করেছে। এসব জড় ও জীবনন্ত বস্তুর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ও পরিবর্তনের মধ্যে ঐক্য রয়েছে এবং রূপ ,রস,গন্ধের,ভরা এক বৈচিএ্যময় জগতের অংশস্বরূপ বিরাজ করছে।

জড় সম্পর্কে বাকালির মতবাদঃ বার্কলি(১৬৮৫-১৭৫৩) লকের মতবাদের সমালোচনা করে বলেন যে ,জড় বা বস্তু যদি অজ্ঞাত হয়,তাহলে তার অস্তিত্বকে বিশ্বাস হতে অযৌক্তিক। বার্কলির মতে,প্রত্যেকটি প্রত্যেক্ষ বস্ত িবিভিন্ন গুণের সমন্বয় ছাড়া আর কিছুই নয় এবং বস্তু তার গুণাবলি হতে আলাদা নয় । তাঁর মতে বস্তুর সব গুণই একই ধরনের এবং এই গৌন গুণের মতো মুখ্য গুণ ও মন নির্ভর । তাই বস্তুর সব গুণই একই ধরনের এবং এই গুণ মনের ধরনের এবং এই নয়। এদি  থেকে যাকে আমরা জড় বলে মনে করি,তা আসেলে মনের কতকগুলো ধারনার সমষ্টি ব্যতীত ছাড়া আর কিছুই বার্কলি এভাবে জড়ের অস্তিত্বকে খন্ডন করেন েএবং সব বস্তুকেই প্রত্যেক্ষ নির্ভরশীল বলে মনে করেন্। বার্কলি ছিলেন একজন ধর্মযাজক এবং ধর্মযাজক হিসেবে তার প্রধান কাজেই ্ঈশ্বরের অস্তিত্বকে প্রমান করা। আর সেজন্যই তার মতে,বস্তু বলতে  কিছু নেই। বরং এ ব্যক্তিফল বা ঈশ্বরের মনের ধারণা ্মাএ।

উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে ,বার্কলির জড়ের কোন অস্তিত্ব নেই। জড় ও বস্তুর গুণ সমার্থক। তার মতে,জড় ‍গুণের সমষ্টি ।বার্কলি মুখ্য ও গৌণ গুণের মধ্যে কোন পার্থক্য স্বীকার করেন না। তিনি জড় বলতে মনের ধারণা ব্যতীত অন্য কিছুই বুঝেন না।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post