আলো বলে অন্ধার তুই বড় কালো, অন্ধার বলে, ভাই তুমি আলো ।
ভাসম্প্রসারণ ১:
ভাব সম্প্রসারণ : সৃষ্টিকর্তা আলো ও অন্ধকার সৃষ্টি করেছেন ।পৃথিবীতে অন্ধকারের অভাবে আলোর গৌরব ম্লান হয়ে যায় ।আলো এবং অন্ধাকার পরস্পর বিপরীতধর্মী হলেও একে অপরের পরিপূরক ।মানবজীবনের সর্বএই আলো-আঁধারুপ সুখ-দুঃখের সবাবেশ দেখতে পাওয়া যায় ।একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব কল্পনামাএ ।জীবনে আলো-আঁধার ,সুখ-দুঃখ,আনন্দ-বেদনা পাশাপাশি আছে বলেই জীবনের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য সহজে অনুধাবন করা যায় ।
আলো ও আঁধার পৃথিবীর
সৃষ্টি থেকেই বিদ্যমান ।আলো ও আঁধার দুটিই বাস্তবতা ।আঁধারের পটভূমিতেই উদ্ভাসিত হয়
আলোর মহিমা ।যদি পৃথিবীতে কখনো সূয অস্ত না যেত ,অহোরাএ সূযালোকে চারদিকে প্লাবিত হত
,তাহলে তার কি কোনো মূল্য থাকত ?অন্ধকার এসে দিবালোককে গ্রাস করে বলেই দিনের আলো বৈচিএ্যহীন
ও বৈশিষ্ট্যহীন হয়ে পড়ে না ।আলো- আঁধারের এই আগমন –নির্গমন আছে বলেই পৃথিবী বৈচিএ্যময়
ও সুন্দর হয়ে উঠেছে ।আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে পরপস্পর বিপরীতধর্মী উপাদানসমূহের দ্বান্দ্বিক
প্রক্রিয়া সচল অস্তিত্ববান ।সৃষ্টি –ধ্বংস,জন্ন-মৃত্যু,আলো-আঁধার ,সুখ-দুঃখ,আনন্দ-বেদনা
,তৃপ্তি-অতৃপ্তি,ভালো-মন্দ,ইতর –ভদ্য,সুজন-কুজন,পাহাড়-সমতল,মরুভূমি-সমূদ্র এসব প্রাকৃতিক
বৈপরীত্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এ জগৎ-সংসার ।এরূপ বৈপরীত্যের মধ্যেই সৃষ্টির সেীন্দয
নিহিত রয়েছে ।নিরবচ্চিন্ন সবকিছুর অস্তিত্বই মূল্যহীন ।মৃ্ত্যু অবধারিত বলেই জীবন এত
মূল্যবান ।পৃথিবীতে মৃত্যুর উপস্তিতি না থাকলে জীবন হত মূল্যহীন ।ধ্বংসের ভয় আছে বলেই মানুষ সৃষ্টিকে সংরক্ষিত করে,ভালোবাসে
।পৃথিবীতে সুখের অস্তিত্ব আছে বলেই মানুষ দুঃখকে হাসিমুখে বরণ করে সুখের আশায় ।আর দুঃখের
অস্তিত্ব আছে বলেই সুখের বৃন্তে বসবাস করার জন্যে মানুষের প্রাণান্ত প্রচেষ্টা ।
আলোর রূপ ফুটিয়ে
তোলার জন্যে যেমন অন্ধকার একান্ত প্রযোজন,তেমনি দুঃখবেদনা ও অভাবের তীব্র জ্বালা আছে
বলেই আমাদের জীবনে সুখ,আনন্দও স্বাচ্ছন্দ্য এত কাম্য ।তাই বলা হয়,‘দুঃখের মত এত বড়
পরশপাথর আর নেই ।’দুঃখ সয়েই আমরা সুখের আনন্দ ও মহিমাকে উপলদ্ধি করি ।বস্তত আলো ও আঁধারের
যুগল অস্তিত্ব পৃকৃতি ও জীবনের বৈশিষ্ট্যকেই তুলে ধরে ।জীবনের এই বাস্তবতার মধ্যেই
আমাদের পথ চলতে হবে ।
ভাসম্প্রসারণ 2:
আলো বলে অন্ধার তুই বড় কালো,অন্ধার বলে,ভাই তুমি আলো ।
ভাব সম্প্রসারণ:
মানবকল্যাণেই সৃষ্টিকর্তা আলো ও অন্ধকার সৃষ্টি
করেছেন ।অন্ধকার ব্যতীত আলোর গৌরব স্ল্ন হয়ে যায় ।আলো এবং অন্ধকার পরস্পর বিপরীতধর্মী
হলেও একে অপরের পরিপূরক ।মানবজীবনের সর্বএই আলো-আঁধাররূপ সুখ-দুঃখের সমাবেশ দেখা যায়
।একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব নিরর্থক।
আমাদের এ সুন্দর
পৃথিবীতে পরস্পর বিপরীতধর্মী উপাদানসমূহের দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়া সচল ,অস্তিত্বমান
।ভালো –মন্দ ,সৃষ্টি –ধ্বংস,জন্ন-মৃত্যু,আলো-আঁধায় ,সুখ-দুঃখ এ সমস্তই পরস্পর বিপরীতধর্মী
হলেও এরা একে অপরের পরিপূরক ।নিরবচ্ছিন্ন সমস্ত কিছুর অস্তিতই মূল্যহীন ।জন্নের পর
মৃত্যু অবধারিত বলেই জীবন যেন অমূল্য রত্ন ।পৃথিবীতে মৃত্যুর উপস্থিতি না থাকলে জীবন
হতো মূল্যহীন ।ধ্বংসের ভয় আছে বলেই মানুষ সৃষ্টিকে সংরক্ষণ করে ভালোবাসে ।পৃথিবীতে
সুখের অস্তিত্ব আছে বলেই মানুষ দুঃকখে হাসিমুখে বরণ করে ।আর দুঃখের অস্তিত্বে আছে বলেই
সুখের বৃন্তে বসবাস করার অনন্ত প্রচেষ্টা মানুষের ।এ জগতে আলো ও অন্ধকার উভয়েরই অস্তিত্ব
দেখতে পাওয়া যায় ।আলো অন্ধকারকে হেয় করার জন্যে বলে যে,অন্ধকার থাকায় এ পৃথিবী এতটা
নিরানন্দময় ।অন্ধকার একথার জবাবে বলে,সে আছে বলেই আলোর অস্তিত্ব এতটা গৌরবদীপ্ত ।অন্ধকার
না থাকলে আলোর গৌরব অনিবাযভাবে স্লান হযে যেত
।যদি পৃথিবীতে কখনো সূয অস্ত না যেত,অহোরাএ সূযালোক চারদিক প্লাবিত হতো ,তাহলে তার
কোনো মূল্য থাকত না ।অন্ধকার এসে দিবালোককে আচ্ছন্ন করে বলেই দিনের আলো এতো গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে ওঠে ।অতএব মানবজীবনে আলো এবং অন্ধকার উভয়েরই প্রয়োজন আছে ।
পৃথিবীতে আলো
ও অন্ধকার এ দুই বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব কল্পনাতীত
।পরস্পরবিরোধী বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্বের কারণেই প্রকৃতি হয়েছে বৈচিএ্যপূর্ণ ,সুষম ।
ভাসম্প্রসারণ ৩:
আলো বলে অন্ধার তুই বড় কালো,অন্ধার বলে,ভাই তুমি আলো
মুলভাব :অন্ধকার
বলেই আলো এত মূল্যবান ।দুঃখ আছে বলেই সুখ এত মহীয়ান ।
বৈচিএ্য সৌন্দযর
প্রসূতি ।বিধাতার সৃষ্টিতে বৈচিএ্য আছে বলেই প্রকৃতির সৌন্দয মানুষের অনুভুতিকে নাড়া
দেয় ।মানুষ বিস্ময়পুলকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে ওঠে ’ ‘বা কি সুন্দর ’ । সরোবরের নিস্তরঙ্গ
কালো জলের পটভুমিতে অপরূপ সৌন্দযের পশুরা সাজিয়ে যখন কমল বিকশিত হয়ে ওঠে ,আমরা তখন
মুগ্ধ হই ।কিন্তু পঙ্কজের এ সৌন্দযকে ফুটিয়ে তোলার জন্য বিশ্বশিল্পী তার মৃণালে কন্টক
সৃষ্টি করেছে ।কন্টক আছে বলেই সম্ভবত কমল এত সুন্দর ও মনোহারী সু্ন্দরী নারীর কপালে
কালো তিল তার স্বাভাবিক সৌন্দযকে শতগুন বর্ধিত করে,তাকে রূপের রাণীতে পরিণত করে ।
আমাদের জীবনে
বিরহ আছে বলেই মিলন এতো মধুর ;দুঃখ আছে বলেই সুখ আমাদের বেশি কাম্য ;অন্ধকার আছে বলেই
আলো এতো আকাঙ্ক্ষিত ।দুনিয়াতে যদি অভাব না থাকত তবে জগতের নিত্য আবিষ্কার সম্ভব হতো
না ।স্তদ্ধ হয়ে পড়তে প্রগতির দুর্বার গতি ।জগতের বিচিএদর্শী জিনিসের মধ্যে তুলনা করার
সুযোগ আছে বলেই আমাদের মানসিক জগতে বিপ্লবাত্নক পরিবর্তন সূচিত হয় ,সুখ-দুঃখ ,আশা-আনন্দদের অনুভূতিতে আমরা
অবিরাম আন্দোলিত হই ।জীবন ও জগতের এ বৈচিএ্যই মানুষে চোখে মায়ার অর্জন পরিয় দেয় । অন্ধকার
আছে বলেই আলো মায়াময় ।অন্ধকার না থাকলে আলোর কোনো মূল্য থাকত না ।আমাদের দৈনন্দিন জীবনে
দুঃখকষ্ট ,হতাশা ,অন্ধকার ,ব্যথা –বিরহ ,অভাব এগুলো আছে বলেই আমরা জীবনকে উপভোগ করতে
পারছি এবং ভালোবাসা ,সুখ মিলন এগুলোর মাঝে নিজেকে বিলীন করতে পারছি ।এখানে মাঝে নিজেকে
বিলীন করতে পারছি ।এখানেই জীবনের সার্থকতা এবং পরিপূর্নতা ।