আন্তর্জাতিক রাজনীতি কী?

 আন্তর্জাতিক রাজনীতি কী? আর্ন্তজাতিক রাজনীতির পরিধি ও বিষয়বস্তুু আলোচনা কর।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি কী?


উওরঃ

 ভূমিকাঃ আন্তর্জাতিক রাজনীতির হালচাল দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে ।আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিবর্তনের সাথে সাথে আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিধি বা বিষয়বস্তুর ও সদা পরিবর্তন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি  এ্রমশ জটিল আকার ধারণ করছে। এ পরিবর্তনশীল ও জটিল আন্তর্জাতিক রাজনীতির রাজনীতির আলোকেই আন্তর্জাতিক রাজনীতি পরিধি উপলদ্ধি করতে হবে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিঃ আন্তর্জাতি অন্যান্য রাজনীতির ন্যায় ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোচনা করে। এক রাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য রাষ্ট্রের যে দ্বন্দ্ব থাকে,তা নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি পর্যালোচনা করে ফলে এর কোন সর্বসম্মত সংজ্ঞা থাকে না।

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন মনীষি ও রাজনীতিবিদগণ আন্তর্জাতিক রাজনীতির সংজ্ঞা বিভিন্নভাবে প্রদান করেছেন। নিম্মে তাদের কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলোঃ

জন হ্যালোসিয়ারের মতে,‘‘আন্তর্জাতিক রাজনীতি বলতে বিভন্ন দেশের সরকারের মধ্যে বিদ্যমান আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক সম্পর্ককেই বুঝায়।’’(International politics discribes offical political relation between governments action on behalf of their states.)

অধ্যাপক কুইস্মি রাইট এর ভাষায়,‘‘বিশ্বের প্রধান প্রধান গুরুত্বপূর্ণ দলগুলোর আচরণের অধ্যয়নকেই আন্তর্জাতিক রাজনীতি বলে।’’

অধ্যাপক প্যান্ডেল ফোর্ড ও লিংকন এর মতে,‘‘বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকারসমুহের মধ্যে যোগাযোগ ও যোগসূএ স্থাপজনিক সম্পর্কই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এবং বিশ্ব রাজনীতির  ভিওি ও বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে। এসব রাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতিমালার মিথস্ক্রিয়াই হচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি।’’

আরো পড়ুন - 

H. J. Motgenthau বলেছেন,``Intetnational politecs like all politics is a struggle for powet whatever the ultimate aims of international politecs .power is always the immediate alim.

পামার ও পারকিনস বছেন,‘‘আন্তর্জাতিক রাজনীতি কুটনীতি ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।’’

আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিধি ও বিষয়বস্তু ঃ নিম্মে আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিধি ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

১.জাতীয় শক্তিঃ আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়বস্তু হলো প্রত্যেক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নিয়ে আলোচনা করা ।এ অস্তি্ত্বে জাতীয় শক্তির উপর নির্ভর করে। তাই আন্তর্জাতি রাজনীতির প্রধান লক্ষ্যে হলো, জাতীয় শক্তির বিভিন্ন দিক  নিয়ে আলোচনা করা। 

২.সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদঃ সম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের উদ্ভব হয়েছে জাতীয় শক্তির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। সাম্রাজ্যবাদ ও নব্য উপরিনিবেশবাদের বৈশিষ্ট্য ,প্রকৃতি ও রূপ বিশ্লেষণ আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য। তােই এ বিষয়টি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্তর্ভুক্ত।

৩.জাতীয়বাদঃ জাতীয়তাবাদ সাম্রাজ্যবাদের পতন ও উপনিবেশবাদকে ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ।আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষণ বিভিন্ন অঞ্চলে জাতীয়বাদের ্উথান ,রূপ ও পরিধি নিয়ে আলোচনা করে।

৪.শক্তি,সাম্য ও যৌথ নিরাপওা ঃ মূলত সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর লড়াইয়ের ফরে জন্ন হয় শক্তি,সাম্য ও যৌথ নিরাপওা ব্যবহার । এটা বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর মধ্রে ভারসাম্য রক্ষা করে। 

৫. কুটনীতিঃ শুধুমাএ যৌথ নিরাপওা ব্যবস্থা ছাড়াও আন্তর্জাতিক কুটনৈতিক ব্যবস্থায় মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা চালানো হয়েছে। েএখানে আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে কুটনীতিবিদদের কার্যাবলি,বিভিন্ন প্রকারের কুটনীতি সম্পর্ক আলোচনা করা হয়।

৬.আন্তর্জাতিতক আইনে ঃ কুটনীতি প্রয়োগের জন্য দরকার আন্তর্জাতিক আইন। আন্তর্জাতিক আইনের বিভিন্ন ধারা সম্বদ্ধে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ্‌আলোচনা করা হয়। এ আইন আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে যেরূপ ভূমিকা পালন করে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

.বৈদেশিক নীতিঃ বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কে স্থাপনের মাধ্যমে হলো বৈদেশিক নীতি। পররাষ্ট্র নীতির উপাদান,তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

৮.আন্তর্জাতিক সংগঠনঃ বিশ্ব শস্তি প্রতিষ্টার জন্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লীগ অব নেশনস প্রতিষ্টিত হয় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেল পর জাতি সংঘ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তাই আজ বিশ্ব শাস্তি রক্ষায় জাতিসংঘ প্গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

.জোট নিরপেক্ষতা ঃ জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের লক্ষ্য হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা ও সৌহাদ্যপূর্ন সম্পর্ক গড়ে তোলা । এর মূল বিষয় হলো,বিশ্ব শাস্তি রক্ষা,আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও জাতিয় মুক্তি আন্দোলন জারালো করা,যা আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্তর্ভুক্ত।

০.আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্ববোধঃ মমতাবোধ ,ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতা হলো মানুষের শ্রেষ্ঠ কর্ম। এখানে ্আন্তর্জাতিক রাজনীতি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আন্তর্জাতকি রাজনীতির উপরই নির্ভল করে মানবিক সম্পর্ েতথা ভ্রাতৃত্ববোধ। 

১. স্নায়ুযুদ্ধঃ স্নায়যুদ্ধ পরিপূর্ণ যুদ্ধ না হলেও এটা শান্তিপ্রিয় মানুষকে সবসময় উদ্বিগ্ন রাখে। স্নায়যু্দ্ধ মানে যদিও সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত না হওয়া ,তথাপি এর প্রতিক্রিযা সবসময় নেতিবাচক ।এটা রোধ করে বিশ্ব   শাস্তি স্থাপন করা আন্তর্জাতিক রাজনীতির লক্ষ্য।

১২. নিরস্ত্রীকরণঃ বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন দেশ মারণা্স্ত্র তৈরি করছে,যা মানুষকে সবসময় আতস্কের মাঝে রাখে। এ অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক  রাজনীতিতে যোগ হয়েছে নিরস্ত্রীকরণ।

১৩.প্রচারণাঃ প্রচারণার মাধ্যমে এক রাষ্ট্রের সাথে অন্য রাষ্ট্রের সম্পর্ক পরিপূর্ণ হয়। প্রচারণার সহায়তা ছাড়া আন্তজাতিক রাজনীতিতে সরকারের নীতি আদর্শের পরিচয় ঘটানো যায় না ।এটা আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়।

১৪.অন্য দেশের রাজনীতিঃ বিভিন্ন দেশের সরকারের কার্যাবলি ,রাজনৈতিক দল ,শাসকগোষ্ঠীর কার্যাবলি প্রভাব ইত্যাদি নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি আলোচনা করে। কারণ একটি দেশের অভ্যন্তরীণ নীতির সাথে আন্তর্জাতিক নীতি সম্পর্কিত। তাই বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতির আলোচনা আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষযবস্তু।

১৫.রাজনৈতিক সচেতনতাঃ বর্তমান যুগ আন্তর্জাতিকতার যুগ। সে কারণে জনগণকে রাজনৈতিক দিক দিয়ে সচেতনত করতে আন্তর্জাতিক রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। 

উপসংহারঃ উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়,বর্তমান যুগ আন্তর্জাতিকবাদের যুগ। আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিধি ও বিষয়বস্ত িদ্বারা বিশ্বের প্রতিটি নাগরিকেই প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হন। বিশ্বরাজনীতিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আলোচিত হচ্ছে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post